মওলানা ভাসানী হকি স্টেডিয়ামে শুরু থেকেই একতরফা আধিপত্য বিস্তার করে বিজয়ীরা। ম্যাচে হ্যাটট্রিক করেন অর্পিতা পাল ও আইরিন আক্তার। জাকিয়া আফরোজ ও তন্নী খাতুন করেন ১টি করে গোল।
খেলা শেষে পুরস্কার বিতরণ করেন হকি ফেডারেশনের সভাপতি ও বিমান বাহিনী প্রধান এয়ার চিফ মার্শাল হাসান মাহমুদ খাঁন। বিশেষ অতিথি ছিলেন ব্র্যাক ব্যাংকের চেয়ারম্যান মেহেরিয়ার এম হাসান।
৭ ম্যাচে ১০২ গোল করা বিকেএসপি হজম করেছে মাত্র ১ গোল (ঠাকুরগাঁওয়ের বিপক্ষে)। টুর্নামেন্টের সর্বোচ্চ ৩০ গোল করে সেরা গোলদাতা হয়েছেন বিকেএসপির অধিনায়ক অর্পিতা পাল। আর সেরা খেলোয়াড় হয়েছেন কিশোরগঞ্জের অধিনায়ক ফারদিয়া আক্তার রাত্রি।
⚠️ প্রতিযোগিতা নিয়ে উঠছে প্রশ্ন
এতোটা একতরফা দাপট ঘিরে প্রশ্ন তুলেছেন অনেকেই। জেলা দলের এক কর্মকর্তা মন্তব্য করেন, "বিকেএসপির মতো শক্তিশালী দল এই টুর্নামেন্টে খেললে প্রতিযোগিতা থাকে না। বরং যদি বিকেএসপির খেলোয়াড়রা অন্য দলগুলোতে ভাগ হয়ে খেলতো, তাহলে খেলা জমতো।"
একইসঙ্গে অনেকেই মনে করছেন, প্রতিযোগিতার ভারসাম্য না থাকলে জেলা পর্যায়ের দলগুলোর আগ্রহ হারাবে, হকির প্রসারও বাধাগ্রস্ত হবে।
২০২১ সাল থেকে শুরু হওয়া এই টুর্নামেন্টের এটি তৃতীয় আসর। প্রথম আসরেও চ্যাম্পিয়ন হয়েছিলো বিকেএসপি। দ্বিতীয় আসরে তাদের খেলোয়াড়দের দিয়েই গঠিত হয়েছিলো হকি ফেডারেশনের সবুজ ও লাল দল—তারা ছিলো চ্যাম্পিয়ন ও রানার্সআপ।
এই ধারাবাহিকতা বলছে, এখনও পর্যন্ত বিকেএসপির ছায়া থেকে বেরোতে পারেনি অন্য কোনো জেলা দল।
ব্র্যাক ব্যাংক এবারও টুর্নামেন্টের পৃষ্ঠপোষক ছিলো। ব্যাংকটির চেয়ারম্যান জানিয়েছেন, তারা জেলা পর্যায়ে নারী হকির উন্নয়নে কাজ করতে চায়। তবে তার জন্য দরকার হবে ফেডারেশনের সমন্বিত উদ্যোগ ও প্রতিযোগিতাপূর্ণ টুর্নামেন্ট আয়োজন।
পাকিস্তানের বিপক্ষে বিশ্বকাপ বাছাইয়ের প্লে-অফ সিরিজকে সামনে রেখে বাংলাদেশ জাতীয় হকি দলের প্রস্তুতি শুরু হয়েছে। আগামী ১৩, ১৪ ও ১৬ নভেম্বর মওলানা ভাসানী হকি স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত হবে এই সিরিজ। জয়ী দল সুযোগ পাবে মূল বাছাইপর্বে খেলার।
বাংলাদেশ হকি দলের জন্য এবারের এশিয়া কাপ শেষ হলো হতাশার সুরে। ষষ্ঠ স্থান নিয়ে বিদায় নিতে হয়েছে লাল-সবুজদের। ভারতের বিহারে অনুষ্ঠিত স্থান নির্ধারণী ম্যাচে বাংলাদেশ ভরাডুবি করেছে জাপানের বিপক্ষে, হেরেছে ৬-১ গোলে—যা তাদের এই আসরের সবচেয়ে বড় ব্যবধানের পরাজয়। ম্যাচে জাপানের রিওসুকে শিনোহারা হ্যাটট্রিক করে বাংলাদেশকে একেবারেই চাপের মুখে ফেলে দেন।
রাজগিরে চলমান এশিয়া কাপ হকিতে দারুণ জয় পেয়েছে বাংলাদেশ দল। কাজাখস্তানের বিপক্ষে ৫-১ গোলের ব্যবধানে জিতে লাল-সবুজরা নিশ্চিত করেছে অন্তত ষষ্ঠ স্থান। এ সাফল্যের মধ্য দিয়ে আরও এক ধাপ এগিয়ে গেল ফাইনাল হকি বিশ্বকাপ বাছাইপর্বে খেলার আশা।
এশিয়া কাপ হকির গ্রুপপর্বে একের পর এক বড় হারের কষ্ট নিয়ে মাঠ ছাড়তে হলো বাংলাদেশকে। আগের ম্যাচগুলোতেই মালয়েশিয়া ও চাইনিজ তাইপের বিপক্ষে ব্যর্থতার পর শেষ ম্যাচে আরও শক্তিশালী প্রতিপক্ষ দক্ষিণ কোরিয়ার মুখোমুখি হয় লাল–সবুজ। কিন্তু ভাগ্য পরিবর্তনের বদলে এবারও একই পরিণতি—বড় ব্যবধানের হার।
নারী অনূর্ধ্ব-১৮ এশিয়া কাপ হকিতে অভিষেকেই দারুণ কীর্তি গড়েছে বাংলাদেশ। শক্ত প্রতিপক্ষদের হারিয়ে টুর্নামেন্টে তৃতীয় হয়ে ব্রোঞ্জ জিতেছে লাল-সবুজের মেয়েরা।
এশিয়া কাপ হকির মূল পর্বে প্রথমবারের মতো জায়গা করে নিতে না পারলেও পরিস্থিতির নাটকীয় মোড় বাংলাদেশ দলের জন্য আশার আলো হয়ে উঠেছে। ভারত-পাকিস্তানের চলমান রাজনৈতিক টানাপোড়েনের জেরে এবার পাকিস্তান যদি মূলপর্বে না খেলতে পারে, তাহলে সেই শূন্যস্থান পূরণে সবচেয়ে উপযুক্ত দল হতে পারে বাংলাদেশ।
আসন্ন এএইচএফ কাপে শিরোপা ধরে রাখার মিশনে নামছে বাংলাদেশ হকি দল। তবে এবার লক্ষ্য শুধু ট্রফি নয়, বরং পরবর্তী এশিয়া কাপে জায়গা করে নেওয়াও। আর সেই মিশনে সবচেয়ে বড় অস্ত্র হিসেবে পেনাল্টি কর্নারকে দেখছেন নতুন অধিনায়ক পুষ্কর খিসা মিমো।