অনূর্ধ্ব-২০ বিশ্বকাপের ফাইনালে আর্জেন্টিনা বনাম মরক্কো

আর্জেন্টিনা ফাইনালের টিকিট পায় কলম্বিয়ার বিপক্ষে কঠিন লড়াইয়ে। ম্যাচের একমাত্র গোলটি আসে ৭২তম মিনিটে বদলি হিসেবে নামা ইন্টার মায়ামির তরুণ ফরোয়ার্ড মাতেও সিলভেত্তির পা থেকে। জিয়ানলুকা প্রেস্তিয়ানির নিখুঁত পাসে বল পেয়ে শান্ত মাথায় ফিনিশ করেন তিনি। এই গোলেই ১-০ ব্যবধানে জয় নিশ্চিত করে আর্জেন্টিনা, যা তাদের ২০০৭ সালের পর প্রথম ফাইনাল।

পুরো ম্যাচ জুড়ে ছিল নাটকীয়তা। কলম্বিয়া প্রথমার্ধে বেশ কিছু সুযোগ পেলেও আর্জেন্টিনার গোলরক্ষক সানতিনো বারবির চমৎকার সেভে বেঁচে যায় দলটি। দ্বিতীয়ার্ধে ডিফেন্ডার তোবিয়াস রামিরেজও ছিলেন অসাধারণ, একাধিক গুরুত্বপূর্ণ ট্যাকলে রুখে দেন কলম্বিয়ার আক্রমণ। শেষদিকে জন রেনতেরিয়া দ্বিতীয় হলুদ কার্ড দেখে মাঠ ছাড়লে আর্জেন্টিনা লিড ধরে রাখে দৃঢ়তায়। এ জয়ে তারা নিশ্চিত করে নিজেদের অষ্টম ফাইনাল।

ম্যাচের নায়ক সিলভেত্তি বলেন, “আমরা প্রমাণ করেছি দলগত শক্তিই আমাদের সবচেয়ে বড় সম্পদ। এই জয়ের পেছনে লুকিয়ে আছে পুরো দলের ত্যাগ, ঐক্য আর বিশ্বাস।”

অন্যদিকে, ইতিহাস রচনা করেছে মরক্কো। সেমিফাইনালে তারা ফ্রান্সকে ৫-৪ ব্যবধানে টাইব্রেকারে হারিয়ে প্রথমবারের মতো ফাইনালে উঠে। ম্যাচের নির্ধারিত সময় শেষ হয় ১-১ গোলে সমতায়। ৩১তম মিনিটে ইয়াসির যাবিরির নেওয়া পেনাল্টিতে মরক্কো এগিয়ে যায়, যদিও ফ্রান্সের লুকাস মিশাল দ্বিতীয়ার্ধে সমতা ফেরান। অতিরিক্ত সময়ে রাবি এনজিঙ্গুলা লাল কার্ড দেখে মাঠ ছাড়লে ফ্রান্সের আক্রমণ থমকে যায়। টাইব্রেকারে বদলি গোলরক্ষক আবদেলহাকিম মেসবাহি নায়ক হয়ে ওঠেন—সাডেন ডেথে ফ্রান্সের দজিলিয়ান এনগেসাঁর শট ঠেকিয়ে দেন তিনি।

মরক্কোর মিডফিল্ডার ওথমান মা'ম্মা বলেন, “আমরা কখনো হাল ছাড়িনি। এই জয় শুধু ফুটবল নয়, এটি আফ্রিকার নতুন অধ্যায়ের সূচনা। এখন আমরা বিশ্বচ্যাম্পিয়ন হওয়ার এক ধাপ দূরে।”

সব মিলিয়ে তরুণ ফুটবলের সর্বোচ্চ মঞ্চে এক অনন্য গল্পের সূচনা হতে যাচ্ছে। একদিকে অভিজ্ঞতার প্রতীক আর্জেন্টিনা, অন্যদিকে আত্মবিশ্বাসী মরক্কো—দুই দলের এই ফাইনাল হবে দক্ষতা, আবেগ ও স্বপ্নের লড়াই। বিশ্বজয়ের পথে কে হাসবে শেষ হাসি, সেটাই এখন কোটি সমর্থকের অপেক্ষার কেন্দ্রবিন্দু।