ক্যাচ হাতছাড়া, জয়ও হাতছাড়া! দক্ষিণ আফ্রিকার কাছে হেরে হতাশায় বাংলাদেশ নারী দল

সোমবার প্রোটিয়াদের বিপক্ষে বাংলাদেশ হেরে গেছে ৩ উইকেটে, ম্যাচের মাত্র ৩ বল বাকি থাকতে জয় নিশ্চিত করে দক্ষিণ আফ্রিকা। অথচ ম্যাচের একাধিক মুহূর্তে জয় ছিল নাগালের মধ্যেই—কিন্তু তিনটি সহজ ক্যাচ মিস পুরো ম্যাচের গল্পটাই বদলে দেয়।

আগে ব্যাট করে নির্ধারিত ৫০ ওভারে ৬ উইকেটে ২৩২ রান তোলে বাংলাদেশ।
দলের শুরুটা ধীর হলেও মাঝ ও শেষের ওভারে ব্যাটিং ঝলকে ভরপুর ছিল ইনিংসটি। ওপেনার রুবাইয়া হায়দার ঝিলিক (২৫) ও ফারজানা হক পিঙ্কি (৩০) দলকে স্থিতি এনে দেন। এরপর তৃতীয় উইকেটে নিগার সুলতানা জ্যোতি ও শারমিন আক্তার সুপ্তার ৭৭ রানের জুটি বাংলাদেশকে এগিয়ে নেয়।

সুপ্তা খেলেন দায়িত্বশীল ইনিংস—৭৭ বলে ৫০ রান, ৬টি চারসহ।
কিন্তু ইনিংসের আসল ঝলক আসে শেষ দিকে, যখন স্বর্ণা আক্তার নামেন ক্রিজে। ৩৫ বলে ৫১ রানের ঝড়ো ইনিংসে তিনিই গড়ে দেন বাংলাদেশের হয়ে দ্রুততম ফিফটির নতুন রেকর্ড। ৩টি ছক্কা ও ৩টি চারে তার ইনিংস যেন বদলে দেয় ম্যাচের গতি। শেষদিকে ঋতু মনি (৮ বলে ১৯*) মিলে ২৩২ রানের চ্যালেঞ্জিং সংগ্রহ গড়ে টাইগ্রেসরা।

বোলিংয়ে দারুণ সূচনা পায় বাংলাদেশ। দ্বিতীয় ওভারেই নাহিদা আক্তার ফিরিয়ে দেন তাজমিন ব্রিটসকে। কিন্তু এরপরেই শুরু হয় ক্যাচ মিসের দুঃস্বপ্ন। রাবেয়া খান ফেলে দেন লরা উলভার্টের সহজ ক্যাচ—যিনি পরে ৩১ রান করে গুরুত্বপূর্ণ জুটি গড়েন।

এরপর আবারও ভুল ফিল্ডিংয়ে বাঁচেন ক্লো ট্রায়ন ও নাদিন ডি ক্লার্ক।
যেখানে বাংলাদেশের জয় নিশ্চিত করার সুযোগ ছিল, সেখানেই হাত ফসকে যায় বল, আর তার সঙ্গেই ফসকে যায় জয়ও।

রাবেয়ার দুর্দান্ত বোলিংয়ে কয়েকটি উইকেট এলেও, মাঝের ওভারে ট্রায়ন (৬২) ও মারিয়ান ক্যাপের (৫৬) জুটি গড়ে দেয় দক্ষিণ আফ্রিকার জয়ভিত্তি। শেষদিকে নাদিন ডি ক্লার্ক পান আরও একটি জীবন—এবং সেই জীবনই ম্যাচ জেতায় প্রোটিয়াদের!

শেষ ওভারে দরকার ছিল মাত্র ৮ রান। নাহিদা আক্তারের করা ওভারের প্রথম বলেই চার, তৃতীয় বলেই ছক্কা—এবং সেখানেই ম্যাচ শেষ!
ডি ক্লার্ক থাকেন ২৯ বলে অপরাজিত ৩৭ রানে, যা এনে দেয় দক্ষিণ আফ্রিকার টানা জয়, আর বাংলাদেশের জন্য রেখে যায় শুধুই ‘হতে পারত’-এর দীর্ঘশ্বাস। 😞

এ নিয়ে চার ম্যাচে বাংলাদেশের ঝুলিতে একমাত্র জয়। তবে এই ম্যাচ দেখিয়েছে—লড়াই তারা জানে, কিন্তু সুযোগ কাজে লাগাতে জানতেই হবে।