তারকাহীন ফ্রান্সকে রুখে দিল আইসল্যান্ড

রবিবার রাতে রেইকিয়াভিকের ঠান্ডা আবহাওয়ায় জমে উঠেছিল রোমাঞ্চকর লড়াই। ম্যাচের ৩৯তম মিনিটে সেট-পিস থেকে বল ক্লিয়ার করতে ব্যর্থ হয় ফরাসি ডিফেন্স, আর সেই সুযোগ কাজে লাগিয়ে ভিক্টর পলসন এগিয়ে দেন আইসল্যান্ডকে। তবে বিরতির পর আক্রমণ বাড়ায় সফরকারীরা। একাধিক সুযোগ নষ্টের পর ৬৩ মিনিটে ক্রিস্টোফার এনকুনকুর দারুণ এক শটে সমতায় ফেরে ফ্রান্স।

এর মাত্র পাঁচ মিনিট পরই জঁ-ফিলিপ মাতেতা নিজের দ্বিতীয় আন্তর্জাতিক ম্যাচে প্রথম গোল করে ফ্রান্সকে লিড এনে দেন। কিন্তু আনন্দ দীর্ঘস্থায়ী হয়নি। দুই মিনিট পরই পাল্টা আক্রমণে ক্রিস্টিয়ান হ্লিনসন ঠান্ডা মাথায় ফরাসি গোলরক্ষক মাইক মাইগনকে পরাস্ত করে ম্যাচে ফেরান স্বাগতিকরা। শেষ পর্যন্ত আর গোল না হলে দুই দলই এক পয়েন্ট নিয়ে মাঠ ছাড়ে।

এই ড্রয়ের পরও ফ্রান্স সরাসরি বিশ্বকাপে খেলার পথে একধাপ এগিয়েছে। গ্রুপ ‘ডি’-তে চার ম্যাচ শেষে ১০ পয়েন্ট নিয়ে শীর্ষে রয়েছে তারা। একই দিনে আজারবাইজানকে ২-১ গোলে হারানো ইউক্রেন ৭ পয়েন্ট নিয়ে দ্বিতীয় স্থানে আছে। আর ৪ পয়েন্ট নিয়ে তিন নম্বরে আইসল্যান্ড।

দিদিয়ের দেশঁর দল বল দখল ও আক্রমণে পুরোপুরি আধিপত্য বিস্তার করেছিল। ম্যাচে ৭০ শতাংশ সময় বল ছিল ফরাসিদের নিয়ন্ত্রণে, তারা নেয় ২০টি শট, যার মধ্যে ৯টি লক্ষ্যভেদী। বিপরীতে আইসল্যান্ডের নেওয়া ৪টি শটের দুটি থেকেই আসে গোল।

কিন্তু ফরাসি সমর্থকদের সবচেয়ে বড় হতাশা—দলের সেরা তারকাদের অনুপস্থিতি। কিলিয়ান এমবাপে, উসমান দেম্বেলে, দেজিরে দোয়ে ও ব্র্যাডলি বারকোলার মতো তারকারা চোটে ছিলেন বাইরে। বিশেষ করে গোঁড়ালির চোটে আক্রান্ত এমবাপে ইতিমধ্যে ফিরে গেছেন মাদ্রিদে। ফলে আক্রমণভাগে প্রত্যাশিত ধারটা দেখা যায়নি ফ্রান্সের খেলায়।

তবু ইতিবাচক দিক হলো নতুনদের উত্থান। এনকুনকু ও মাতেতা দুজনেই গোল করে নিজেদের সামর্থ্যের প্রমাণ দিয়েছেন। এই ম্যাচে দলগত পারফরম্যান্স ভালো হলেও শেষ মুহূর্তের গোল ঠেকাতে না পারার হতাশা নিয়েই মাঠ ছাড়তে হয়েছে ফ্রান্সকে।

এখন সামনে বড় পরীক্ষা ১৩ নভেম্বর, ঘরের মাঠ প্যারিসে ইউক্রেনের বিপক্ষে ম্যাচ। সেই ম্যাচই হতে পারে যুক্তরাষ্ট্র, মেক্সিকো ও কানাডায় অনুষ্ঠিতব্য আগামী বছরের বিশ্বকাপে জায়গা পাওয়ার নির্ধারক লড়াই।

অন্যদিকে বাছাইপর্বের অন্য ম্যাচগুলোতেও ছিল উত্তাপ। নর্দান আয়ারল্যান্ডকে ১-০ গোলে হারিয়েছে জার্মানি—ভল্টমেডের একমাত্র গোলে তিন পয়েন্ট নিয়ে তারা ফিরেছে ঘরে। চার ম্যাচে ৯ পয়েন্ট নিয়ে পয়েন্ট টেবিলের শীর্ষে আছে তারা, যদিও সমান পয়েন্টে গোল ব্যবধানে পিছিয়ে স্লোভাকিয়া ঠিক তাদের পেছনেই।

ওয়েলসের বিপক্ষে ৪-২ গোলে দাপুটে জয় পেয়েছে বেলজিয়াম। নাপোলির মিডফিল্ডার কেভিন ডি ব্রুইনা করেছেন জোড়া গোল, দুটিই এসেছে পেনাল্টি থেকে। এই জয়ে ১৪ পয়েন্ট নিয়ে গ্রুপ ‘জে’তে শীর্ষে ‘রেড ডেভিলস’। এক ম্যাচ বেশি খেলে ১৩ পয়েন্ট নিয়ে দ্বিতীয় স্থানে নর্থ মেসিডোনিয়া।

এমবাপে ছাড়া ফ্রান্স জয়ের ছন্দে ফিরতে পারেনি বটে, তবে দিদিয়ের দেশঁর দল জানে—বিশ্বকাপের পথে এখন আর কোনো ভুলের জায়গা নেই।