রোমাঞ্চে ভরা দুঃস্বপ্ন: শেষ মুহূর্তের ধাক্কায় বাংলাদেশের হৃদয়ভাঙা হার

বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়ামে রোমাঞ্চ, উত্তেজনা, নাটক—সবই ছিল ম্যাচজুড়ে। কিন্তু শেষ বাঁশির আগ মুহূর্তে স্বপ্নভঙ্গের কষ্ট নিয়েই মাঠ ছাড়তে হলো বাংলাদেশকে। সাত গোলের অবিশ্বাস্য লড়াইয়ে ৪–৩ গোলে হংকং, চায়নার কাছে হেরে এএফসি এশিয়ান কাপে খেলার আশা প্রায় শেষ জামাল ভূঁইয়াদের দলের।

খেলার শুরু থেকেই গ্যালারিতে ছিল অগ্নিগর্ভ পরিবেশ। ম্যাচের ১৩ মিনিটেই বাংলাদেশকে এগিয়ে দেন হামজা চৌধুরী। বক্সের বাইরে থেকে বাঁকানো ফ্রি–কিকে হংকংয়ের জাল কাঁপিয়ে উল্লাসে মাতেন সমর্থকেরা। জাতীয় দলের হয়ে এটি ছিল হামজার দ্বিতীয় গোল।

তবে প্রথমার্ধের একদম শেষ দিকে সমতায় ফেরে হংকং। রাকিব হোসেনের ভুল হেডে বিপদ ডেকে আনেন তিনি নিজেই। সেই সুযোগে হংকং ফরোয়ার্ড এভারটন কামারগো সহজেই বল পাঠান জালে।

দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতেই আরও বিপদে পড়ে বাংলাদেশ। ৫০ মিনিটে রাফায়েল মেরকিস অফসাইড ট্র্যাপ ভেদ করে লিড দ্বিগুণ করেন। এরপর ৭৪ মিনিটে একই খেলোয়াড় বাংলাদেশের ডিফেন্স ভেদ করে স্কোরলাইন করেন ৩–১।

তবে এখানেই থেমে থাকেনি লাল-সবুজেরা। ৮৪ মিনিটে মোরছালিনের দুর্দান্ত গোল ম্যাচে ফেরায় বাংলাদেশকে। তারপর যোগ করা সময়ে নাটকীয়তা পৌঁছায় চূড়ান্তে। কর্নার থেকে আসা বলে বিদ্যুতগতির হেডে গোল করে ৩–৩ সমতায় আনেন কানাডা প্রবাসী তরুণ শমিত সোম—যা ছিল তাঁর প্রথম আন্তর্জাতিক গোল।

গ্যালারিতে তখন উল্লাস, সমতা ফিরিয়ে জয়ের স্বপ্নে ভাসছে বাংলাদেশ। কিন্তু সেই স্বপ্ন কয়েক সেকেন্ডেই ভেঙে দেয় হংকং। রেফারির শেষ বাঁশির ঠিক আগে হ্যাটট্রিক পূর্ণ করে ম্যাচে জয় এনে দেন রাফায়েল মেরকিস।

তিন ম্যাচে সাত পয়েন্ট নিয়ে গ্রুপে নিজেদের অবস্থান মজবুত করেছে ইয়াপ হাং ফাইয়ের হংকং। অন্যদিকে এক পয়েন্টে তলানিতে বাংলাদেশ।

কোচ হাভিয়ের কাবরেরা ম্যাচ শেষে বলেন, “আমরা শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত লড়েছি। কিন্তু কিছু ভুল আবারও আমাদের বিপদে ফেলেছে। শেখার জায়গা এখানেই।”

বাংলাদেশের ফুটবলাররা হয়তো হার দিয়ে মাঠ ছেড়েছেন, কিন্তু লড়াইয়ের মনোভাব ছুঁয়ে গেছে সমর্থকের হৃদয়। শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত লড়াই করে যাওয়াটাই এই দলের সবচেয়ে বড় অর্জন—একটা হার, যা হয়তো একদিন প্রেরণার গল্প হয়ে ফিরবে।